যোগাযোগ করো, তোমার পাশে আমরা।
যোগাযোগ করো, তোমার পাশে আমরা।
সরাসরি কথা বলতে "কল করো" বাটনে প্রেস করো সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।
কল করো

লক্ষ্মীপুর জেলা | Lakshmipur District

Created by I Education in ৬৪ জেলা 11 Mar 2025
Share

লক্ষ্মীপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।

লক্ষ্মীপুর জেলার মোট আয়তন ১৩৬৭.৫৯ বর্গ কিলোমিটার।

রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৫৭ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে চাঁদপুর জেলা; পূর্বে ও দক্ষিণে নোয়াখালী জেলা এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী, ভোলা জেলা ও বরিশাল জেলা অবস্থিত। লক্ষ্মীপুর শহর রহমতখালি নদীর তীরে অবস্থিত।

এ জেলার নামকরণ সম্পর্কে যতদূর জানা যায় তা হলো:

লক্ষ্মী, হিন্দু ধর্মানুসারে ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্যের দেবী এবং পুর হল শহর বা নগর। এ হিসাবে লক্ষ্মীপুর এর সাধারণ অর্থ দাঁড়ায় সম্পদ সমৃদ্ধ শহর বা সৌভাগ্যের নগরী।

লক্ষ্মীপুর নামে সর্বপ্রথম থানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬০ সালে। রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নিয়ে ১৯৭৯ সালের ১৯ জুলাই লক্ষ্মীপুর মহকুমা এবং একই এলাকা নিয়ে ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় লক্ষ্মীপুর জেলা। 

ত্রয়োদশ শতাব্দীতে লক্ষ্মীপুর ভুলুয়া রাজ্যের অধীন ছিল। মুঘল ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে লক্ষ্মীপুরে একটি সামরিক স্থাপনা ছিল। ষোড়শ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লবণ উৎপন্ন হত এবং বাইরে রপ্তানি হত। যার কারণে এখানে লবণ বিপ্লব ঘটে। স্বদেশী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরবাসী স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করে। এ সময় মহাত্মা গান্ধি এ অঞ্চল ভ্রমণ করেন। তিনি তখন প্রায়ই কাফিলাতলি আখড়া ও রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ীতে অবস্থান করতেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৬ সালের জুন মাসে লক্ষ্মীপুর সফরে আসেন।

লক্ষ্মীপুর জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক হল ঢাকা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক এবং চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক। এছাড়া নদী মাতৃক জেলা হওয়ায় নদী পথেও লক্ষ্মীপুরের সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ ও পণ্য পরিবহন করা হয়।

এ জেলাটি মুলত কৃষি নির্ভর। এর পাশাপাশি এ জেলায় আছে লক্ষীপুর নৌ বন্দর এবং প্রধান রপ্তানি পণ্য এর মধ্যে আছে: নারিকেল, মাছ, মরিচ, কাঠ বাদাম, সুপারি, সয়াবিন ইত্যাদি। 

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে এ জেলায় 

গণকবর: ৪টি

বধ্যভূমি: ২টি

স্মৃতিস্তম্ভ ৩টি

লক্ষ্মীপুর জেলায় ৬টি থানা, ৪টি পৌরসভা এবং ৫টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:

কমলনগর, রামগঞ্জ, রামগতি, রায়পুর এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা। 

এছাড়াও এ জেলায় ২৭৪ থেকে ২৭৭ পর্যন্ত মোট ৪টি সংসদীয় আসন রয়েছে। 

এ জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে:

লক্সীপুর সরকারি কলেজ

লক্ষীপুর সরকারি মহিলা কলেজ

রায়পুর সরকারি কলেজ

রামগঞ্জ সরকারি কলেজ

লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ইত্যাদি

লক্ষ্মীপুর জেলার প্রধান নদীগুলো হল 

মেঘনা নদী, 

ডাকাতিয়া নদী, 

কাটাখালী নদী, 

রহমতখালি নদী 

চন্দনা ও ভুলুয়া নদী


এ জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে:

ইসহাক জমিদার বাড়ি

কামানখোলা জমিদার বাড়ি

জ্বীনের মসজিদ

তিতা খাঁ জামে মসজিদ

দালাল বাজার জমিদার বাড়ি 

মজু চৌধুরীর হাট নদীবন্দর

মেঘনা নদী

রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (এশিয়ার বৃহত্তম)

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ (লক্ষ্মীপুর জেলার প্রথম শহীদ মিনার)

লক্ষ্মীপুর স্টেডিয়াম

শ্রীরামপুর রাজবাড়ী

আলেকজান্ডার মেঘনা বীচ

কমলনগর বীচ

কাজির দিঘির পাড় ঈদগাহ ময়দান

এবং

দালাল বাজার মহাপ্রভু মন্দির


এ জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন:

এটিএম শামসুজ্জামান- অভিনেতা

বিশ্বম্ভর শূর –– আদিশূরের ৯ম পুত্র, ভুলুয়া রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।

শাহ্‌ মিরাণ বোগদাদী (রঃ) –– বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর নাতি, এবং সিলেটের হযরত শাহপরান (রঃ) ভাই

লক্ষণ মানিক, অনন্ত মানিক, বলরাম মানিক –– ভুলুয়া নরপতি (বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম)।

রাজা গোরকিশোর রায় –– দালাল বাজার জমিদার

আজিম শাহ্ –– ইসলামী ব্যক্তিত্ব এবং প্রতিষ্ঠাতা, লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদ্রাসা (১৮৫৭)।

আবুল খায়ের নাজমুল করিম (ইবনে রশিদ) -- বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞানের জনক।

পূর্ণশশী চৌধুরাণী –– দালাল বাজার জমিদার পত্নী এবং লক্ষ্মীপুর টাউন লাইব্রেরি ও টাউন হল এর প্রতিষ্ঠাতা।

মোহাম্মদ তোয়াহা –– ভাষা সৈনিক এবং রাজনীতিবিদ

মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী –– রাজনীতিবিদ, ইসলামী ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা।

নিশাত মজুমদার –– প্রথম বাংলাদেশী নারী এভারেষ্ট বিজয়ী।

আ স ম আবদুর রব –– বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলনকারী, বঙ্গবন্ধুকে জাতীর পিতা উপাধি দানকারী, ডাকসুর সাবেক ভিপি, সাবেক মন্ত্রী

মোহাম্মদ উল্লাহ –– বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং গণপরিষদের প্রথম স্পিকার।

আবুল আহসান –– বিশিষ্ট কূটনীতিক এবং সার্ক এর প্রথম মহাসচিব।

আব্দুল মতিন চৌধুরী –– পদার্থবিজ্ঞানী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য।

এ. এন. এম মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী –– কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য।

রুহুল আমিন –– বাংলাদেশের ১৫ তম প্রধান বিচারপতি।

আবদুল হাকিম -- বঙ্গীয় পরিষদ সদস্য ১৯৪৬ সাল।

সিরাজুল ইসলাম - বাংলাপিডিয়ার প্রধান সম্পাদক

জিয়াউল হক জিয়া –– স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী

সেলিনা হোসেন –– বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক

ঝর্ণা ধারা চৌধুরী –– একুশে পদক প্রাপ্ত সমাজকর্মী।

মোঃ বদিউজ্জামান –– দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সাবেক চেয়ারম্যান।

রামেন্দু মজুমদার –– অভিনেতা, সম্মানীত সভাপতি, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট।

মাহফুজ আহমেদ –– অভিনেতা।

তারিন জাহান –– অভিনেত্রী।

রোজী আফসারী –– বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

দিলারা জামান -- চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

রওশন রুবী -- কবি, সাহিত্যিক ও সংগঠক

হুমাইরা হিমু –– অভিনেত্রী।


এছাড়াও এ জেলা থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক এবং সাময়িকী প্রকাশিত হয় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: লক্ষ্মীপুর কণ্ঠ, লক্ষ্মীপুর নিউজ, গ্রামীণ কণ্ঠ, সাপ্তাহিক ফয়সালা ইত্যাদি। 

Comments (0)

Share

Share this post with others