মুন্সিগঞ্জ জেলা | Munshiganj District | iEducation
মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা। মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন নাম বিক্রমপুর। এ জেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান হলো:
‘‘প্রত্ননগরী মুন্সীগঞ্জ”
এ জেলার নামকরণ সম্পর্কে যতদূর জানা যায় তা হলো:
মোঘল শাসনামলে মুন্সীগঞ্জ এর নাম ছিলো ইদ্রাকপুর। ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ইদ্রাকপুর কেল্লার ফৌজদারের নাম ছিলো ইদ্রাক। ধারণা করা হয় তার নাম অনুসারেই তখন এখানকার নাম হয়েছিলো ইদ্রাকপুর। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময়ে রামপালের কাজী কসবা গ্রামের মুন্সী এনায়েত আলীর জমিদারভুক্ত হওয়ার পর তার মুন্সী নাম থেকে ইদ্রাকপুরের নাম মুন্সীগঞ্জ হিসেবে অভিহিত হয়। আবার অনেকের মতে, মোঘল শাসনামলে এলাকার ফৌজদারী আদালতের প্রধান হায়দার আলী মুন্সীর নামানুসারে মুন্সীগঞ্জ নামের উৎপত্তি।
মুন্সিগঞ্জ জেলা | Munshiganj District | iEducation
মুন্সিগঞ্জ মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। মুন্সীগঞ্জ জেলার আয়তন ৯৫৪.৯৬ বর্গ কিমি। মুন্সীগঞ্জ জেলার উত্তরে ও উত্তর পশ্চিমে ঢাকা জেলা,উত্তর-পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে মাদারীপুর জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও পদ্মা নদী, পূর্বে মেঘনা নদী ও কুমিল্লা জেলা, পূর্ব-দক্ষিণ দিকে চাঁদপুর জেলা এবং পশ্চিমে পদ্মা নদী, ঢাকা ও ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ অবস্থিত।
মুন্সীগঞ্জ জেলায় ৬টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা, ১৭১-১৭৩ পর্যন্ত মোট ৩টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এ জেলার উপজেলাগুলো হলো:
গজারিয়া, টঙ্গিবাড়ী, মুন্সিগঞ্জ সদর, লৌহজং, শ্রীনগর এবং সিরাজদিখাঁন উপজেলা।
এর মধ্যে বৃহত্তম থানা- শ্রীনগর (২০৩ বর্গ কিমি) এবং ক্ষুদ্রতম থানা- লৌহজং (১৩০ বর্গ কিমি)।
মুন্সিগঞ্জ জেলা | Munshiganj District | iEducation
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল বাজার সুস্বাদু মিষ্টি ও ঘোলের জন্য সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে সুপরিচিত। মুন্সিগঞ্জ জেলা ২ নং সেক্টরের মধ্যে ছিলো এবং ১১ ডিসেম্বর এ জেলা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়।
২০২২ সালের জনশুমারী ও গৃহগণনা প্রতিবেদন অনুযায়ী এ জেলার জনসংখ্যা প্রায় ১৬,২৫,৪১৮ জন এবং এ জেলার স্বাক্ষরতার হার ৭৭.৮০%। মুন্সীগঞ্জের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে:
প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডঃ ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ;
ধাইদা হাফিজিয়া কওমীয়া মাদ্রাসা;
মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়;
কে কে গভঃ ইন্সটিটিঊশন ইত্যাদি।
মুন্সীগঞ্জ জেলার উল্লেখযোগ্য নদ-নদীর মধ্যে রয়েছে: পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী, ইছামতি নদী ইত্যাদি।
মুন্সিগঞ্জ জেলা | Munshiganj District | iEducation
এ জেলার উল্লেখযোগ্য ও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে:
নয়াগাঁও বেরিবাধ,
রাজা শ্রীনাথের বাড়ি,
ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি,
আড়িয়াল বিল;
রামপালে বাবা আদম মসজিদ,
হাসারার দরগা,
সোনারং জোড়া মন্দির,
পদ্মার চর,
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় অবস্থিত দেশের প্রথম ঔষধ শিল্প পার্ক;
ইদ্রাকপুর কেল্লা,
রাজা বল্লাল সেন ও হরিশচন্দ্রের দীঘি,
শুলপুরের গির্জা,
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট প্রভৃতি
ধলেশ্বরী সকার কিংস ক্লাব
ধলেশ্বরী নদী
বিক্রমপুর বিহার
পদ্মা সেতু;
নাটেশ্বর দেউলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
শেখর নগর কালীবাড়ী,
শ্যামসিদ্ধির মঠ,
শুলপুরের গির্জা ইত্যাদি।
মুন্সিগঞ্জ জেলা | Munshiganj District | iEducation
এ জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন:
জগদীশ চন্দ্র বসু - বাঙালি পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী এবং কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা;
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ - বাঙালি আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা সংগ্রামী, কবি ও লেখক;
আলাউদ্দিন আলী - গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক;
অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ - সাবেক রাষ্ট্রপতি;
ব্রজেন দাস - প্রথম দক্ষিণ এশীয় ব্যক্তি, যিনি সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন;
সৈয়দ মাইনুল হোসেন - জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের স্থপতি;
ইমদাদুল হক মিলন - দৈনিক কালের কণ্ঠের সাবেক সম্পাদক;
হুমায়ুন আজাদ - লেখক;
অনন্ত জলিল - অভিনেতা;
ফখরুদ্দীন আহমেদ - বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর;
এম হামিদুল্লাহ খান - ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর অধিনায়ক;
এম কোরবান আলী - তৃতীয় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও সাবেক মন্ত্রী;
শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর - বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরুষ;
সরোজিনী নাইডু - ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী মহিলা নেতা;
সত্যেন সেন - বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র প্রতিষ্ঠাতা;
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় - সাহিত্যিক;
সাদেক হোসেন খোকা - সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র;
চাষী নজরুল ইসলাম - চলচ্চিত্র পরিচালক;
বুদ্ধদেব বসু - লেখক;
সমরেশ বসু - লেখক প্রমুখ।
এ জেলা থেকে যেসব পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয় তার মধ্যে রয়েছে: মুন্সিগঞ্জের কাগজ; সাপ্তাহিক মুন্সিগঞ্জ সংবাদ, খোলা কাগজ, কাগজের খবর, সত্য প্রকাশ ইত্যাদি।
মুন্সিগঞ্জ জেলা | Munshiganj District | iEducation