লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
লালমনিরহাট, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের অবস্থিত একটি জেলা। এ জেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান হলো:
ভুট্টায় ভরা সবার ঘর
লালমনিরহাট স্বনির্ভর
এ জেলার নাম কেন লালমনিরহাট হলো সে সম্পর্কে বেশ কয়েকটি মত চালু আছে। সেগুলো হলো-
১৭৮৩ সালে সাধারণ কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লালমনি নামে এক মহিলা কৃষক নেতা নুরুলদিনকে সাথে নিয়ে ব্রিটিশ সৈন্য ও জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে। সেই থেকে এ জায়গার নাম হয় 'লালমনি'। কালের বিবর্তনে 'হাট' শব্দটি 'লালমনি' শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে 'লালমনিরহাট' নামকরন করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
এ জেলার মোট আয়তন প্রায় ১,২৪০.৯৩ বর্গকিমি এবং ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৩২৯ কিলোমিটার। লালমনিরহাট জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে রংপুর জেলা ও কুড়িগ্রাম জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলা এবং পশ্চিমে নীলফামারী জেলা অবস্থিত।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
লালমনিরহাট জেলায় ১৬-১৮ পর্যন্ত মোট ৩টি সংসদীয় আসন এবং ৫টি উপজেলা রয়েছে। এ জেলার উপজেলাগুলো হলোঃ
আদিতমারী, কালীগঞ্জ, পাটগ্রাম, লালমনিরহাট সদর ও হাতীবান্ধা উপজেলা।
লালমনিরহাট জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। এ জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে হাতীবান্ধা উপজেলা সর্ববৃহৎ (২৮৮.৪২ বর্গ কিমি) এবং জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা আদিতমারী (১৯৫.০৩ বর্গ কিমি)।
লালমনিরহাটকে ছিটমহলবেষ্টিত জেলা বলা যায়। এ জেলায় ৩৩ টি ছিটমহল রয়েছে। বৃহত্তম ছিটমহল দুটি হচ্ছে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা। তিন বিঘা করিডরের মাধ্যমে এই দুই ছিটমহলকে মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে লালমনিরহাট জেলা ছিল ৬ নং সেক্টরের অধীন এবং ৬ ডিসেম্বর এ জেলা শত্রুমুক্ত হয়।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
২০২২ সালের জনশুমারী ও গৃহগণনা প্রতিবেদন অনুযায়ী এ জেলার জনসংখ্যা প্রায় ১৪,২৮,৪০৬ জন এবং শিক্ষার হার ৭১.১৮ শতাংশ। এ জেলার কিছু উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়;
সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজ;
লালমনিরহাট সরকারি কলেজ;
হাতীবান্ধা এস এস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়;
আদিতমারী সরকারি কলেজ;
মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ ইত্যাদি।
এ জেলায় যেসকল নদী রয়েছে তার মধ্যে আছে: তিস্তা, ধরলা, সতী, সানিয়াজান, সিংগিমারী নদী, ত্রিমোহনী, গিরীধারী, ভেটেশ্বর, মালদহ, স্বর্ণামতি ও রত্নাই নদী।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
এ জেলার কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন:
গোলাম মোহাম্মদ কাদের - সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান;
তমিজ উদ্দিন - বীর বিক্রম;
শেখ রেয়াজউদ্দীন আহমদ - বাংলা একাডেমির ফেলো;
শেখ ফজলল করিম - ব্রিটিশ-ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক;
আসাদুল হাবিব দুলু - যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী;
মুসা ইব্রাহিম - বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী;
সাথিরা জাকির -- সাবেক ক্রিকেটার;
নুরুজ্জামান আহমেদ- সমাজকল্যাণ মন্ত্রী;
মোঃ মোতাহার হোসেন - সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী;
রইছউল আলম মন্ডল - সাবেক সচিব;
শাফিয়া খাতুন - সাবেক সমাজ কল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা (মন্ত্রী);
কামরুল ইসলাম ভূইঁয়া - অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা;
রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ - সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রমুখ।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
এ জেলার কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক, দর্শনীয় ও উল্লেখযোগ্য স্থানের মধ্যে আছে:
৬৯ হিজরীর হারানো মসজিদ;
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন;
তিস্তা ব্যারেজ;
লালমনিরহাট বিমানবন্দর;
তিনবিঘা করিডোর;
কাকিনা জমিদার বাড়ি;
তুষভাণ্ডার জমিদার বাড়ি;
নিদারিয়া মসজিদ;
বিমান ঘাঁটি;
মোগলহাট জিরো পয়েন্ট;
তিস্তা রেলওয়ে সেতু;
বিরল প্রজাতির বৃক্ষ ‘নাগ লিঙ্গম’;
কুতুব খানা;
সিন্দুর মতি;
লালমনিরহাট জেলা জাদুঘর (লালমনিরহাট সদর);
খেতু মুহাম্মদ সরকারের সেতু ও কুয়া (আদিতমারী);
বুড়িমারী স্থল বন্দর (পাটগ্রাম);
জমিদার মহিমারঞ্জনের জাদুঘর;
শেখ ফজলল করিমের বাড়ি;
শালবন (হাতীবান্ধা) ইত্যাদি।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation
এ জেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় যার মধ্যে আছে: দৈনিক লালপ্রভাত (২০০০); সাপ্তাহিক: লালমনিরহাট বার্তা (১৯৯১), জানাজানি (১৯৮৪) ইত্যাদি।
লালমনিরহাট জেলা | Lalmonirhat District | iEducation